আমার সুরমা ডটকম ডেক্স: কানাডার কুইবেকে একটি মসজিদে হামলার একমাত্র সন্দেহভাজন ২৭ বছর বয়সী আলেক্সান্দ্রে বিজোনেটে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, ফ্রান্সের ডানপন্থি নেতা ম্যারিন ল্য পেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী দল পার্তি কিউবিকোয়েস ও ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ভক্ত। অন্তত তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে এমন ইঙ্গিতই মেলে। এ খবর দিয়েছে দ্য কানাডিয়ান প্রেস।
কানাডার টরেন্টো স্টার পত্রিকা লিখেছে, তাকে কেউ কেউ অন্তর্মুখী বলে বর্ণনা করেছেন। কেউ আবার বলছেন তিনি উগ্র ডানপন্থি ফ্যানাটিক। তার বিরুদ্ধে হত্যার একটি ও হত্যাচেষ্টার ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় আদালতের একজন ক্লার্ক প্রাথমিকভাবে বিজোনেটকে দুই সন্দেহভাজনের একজন হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তবে সোমবার বিকালের দিকে এটি নিশ্চিত করা হয়, বিজোনেটেই একমাত্র সন্দেহভাজন। তিনি বসবাস করতেন ক্যাপরোগ শহরতলির রু ডু ট্রাসেলে। এখান থেকে হামলার শিকার মসজিদের দূরত্ব মাত্র ১৫ মিনিট। সোমবার সন্ধ্যায় ল্যাভাল নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চিত করে, বিজোনেট তাদের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে পড়তেন। তার ব্যাপারে সহপাঠী ও পরিচিতজনদের কাছ থেকে কিছুটা বিস্তারিত জানা গেছে। তবে অনলাইন ‘লাইক’ ও ‘মন্তব্যে’র বাইরে তার সম্পর্কে খুবই কম জানা গেছে। সেইন্ট-ফয় ও ইউনিভার্সিটিতে ল্যাভালের দাবা দলে নিজের যমজ ভাইকে নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। একথা বলেছেন অধ্যাপক জ্যঁ সেভিগনি, যিনি বিজোনেট ও তার ভাইকে ওই ক্লাবের কারণে চিনতেন। সেভিগনি আরো বলেন, ‘তার মধ্যে খুব ভালো লোক হওয়ার ছাপ ছিল।’ সেভিগনি তাকে সর্বশেষ দেখেছেন ২০১৫ সালের শীতে। বিজোনেটের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করেছেন এমন লোকজন বলছেন সম্পূর্ণ অন্য বিষয়।
এদিকে কুইবেক শহরে শরণার্থীদের স্বাগত জানানো একটি সংগঠনের ফেসবুক পেইজে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিজোনেটে ‘ইউনিভার্সিটিতে ল্যাভাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ল্য পেন-পন্থি ও নারীবাদবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।’ ওই পেইজের নেপথ্যের ব্যক্তি ফ্রাসোয়া ডেসচ্যাম্পস স্থানীয় পত্রিকা লা প্রেসকে বলেন, একটি অনলাইনের ট্রলে বিজোনেটেকে সঙ্গে সঙ্গে চিনে ফেলেন তিনি।
সোমবার বিজোনেটের ফেসবুক প্রোফাইল ডিলেট করে দেয়া হয়। তবে তার লাইক দেয়া পেইজগুলোর মধ্যে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, ফরাসি উগ্র ডানপন্থি রাজনীতিবিদ ল্য পেন, সাবেক এনডিপি নেতা জ্যাক লেয়টন। এছাড়া বেশ কয়েকটি ভিডিও গেমস, গায়ক ও ল্যাভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের পেইজে লাইক দিয়েছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তার সহপাঠী জ্যঁ মিশেল অ্যালার্ড প্রাস বলেন, তার সঙ্গে বিজোনেটের সম্পর্ক পড়ালেখা ও অনলাইনে রাজনীতি নিয়ে তর্ক করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রাস বলেন, তিন সপ্তাহ আগে তার সঙ্গে বিজোনেটের দেখা হয়েছিল। তখন প্রাসের কাছে তাকে সহিংস ব্যক্তির মতো মনে হয়নি। প্রাসের ভাষ্য, ‘সে ছিল কিছুটা একাকী, অন্তর্মুখী। কিছুটা অদ্ভুত।’ আরেকটি ফেসবুক পেইজের ছবিতে আলেক্সান্দ্রে বিজোনেটকে দেখা গেছে পারিবারিক অনুষ্ঠানে। তার এক প্রতিবেশী রোজালি বুশিয়েরেস বলেন, বিজোনেটে ছিল খুবই একাকী। আর খুবই অসামাজিক।